বুধবার, মার্চ ২৯, ২০২৩
- বিজ্ঞাপন -

অপারেটিং সিস্টেম এর বিস্তারিত

আসসালামু আলাইকুম, উড্ডয়নে আপনাকে স্বাগতম!
কেমন আছেন? আশা করি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন।

আজ আমরা আলাপ করবো অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে।

অপারেটিং সিস্টেম (Operating System, বা সংক্ষেপে OS) হলো একটি বিশেষ সিস্টেম সফটওয়্যার যা একটি কম্পিউটার ও সফটওয়্যার এবং কম্পিউটার প্রোগ্রামের জন্যে সাধারণ সেবা সরবরাহ করে। অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটার ও ব্যহারকারীদের থেকে ইনপুট নেয় এবং বিভিন্ন টাস্ক ও কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ সিস্টেম সম্পর্ক বণ্টন ও ব্যবস্থাপনা করে ব্যবহারকারী ও অন্যান্য প্রোগ্রামকে সেবা প্রদান করে থাকে। মেমরি বণ্টন / নিয়ন্ত্রণ, সিস্টেম প্রসেস অগ্রাধিকার নির্ণয়, ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইস নিয়ন্ত্রণ, কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং ও ফাইল সিস্টেম ব্যবস্থাপনা ইত্যাদিই হচ্ছে অপারেটিং সিস্টেমের কাজ। লিনাক্স, উইন্ডোজ, আইওএস, ক্রোম ওএস, ম্যাক ওএস ও অ্যানড্রয়েড হচ্ছে কয়েকটি অপারেটিং সিস্টেম। অপারেটিং সিস্টেম মূলত অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রাম চলার জন্য পরিবেশ তৈরি করে। ব্যবহারকারীর কাছে অপারেটিং সিস্টেমের সবচেয়ে দৃশ্যমান প্রধান রূপ হচ্ছে কম্পিউটারের ব্যবহারকারী ইন্টারফেস।

অপারেটিং সিস্টেম এর বিস্তারিত বর্ণনাঃ

বহুপ্রোগ্রামিং সম্পাদনঃ
সিপিইউকে সর্বাধিক দক্ষভাবে ব্যবহার করার জন্য আধুনিক অপারেটিং সিস্টেমগুলোতে বহুপ্রোগ্রামিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এতে করে মেমরিতে একসাথে এক বা একাধিক জব থাকতে পারে, ফলে সিপিইউতে সবসময়ই কোন না কোন জব প্রস্তুত থাকে যা সিপিইউ-কে দিয়ে করিয়ে নেয়া যায়। বহুপ্রোগ্রামিং ব্যবস্থার জন্য একটি সম্প্রসারিত রূপ হচ্ছে সময় শেয়ারকারী ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় সিপিইউ -এর শিডিউলিং অ্যালগোরিদমগুলি খুব দ্রুত এক জব থেকে আরেক জবে সুইচ করতে পারে, তাই আমাদের মনে হয় প্রোগ্রামগুলোর জব একসাথে চলছে।

মোডঃ
ব্যবহারকারীর প্রোগ্রামগুলো যাতে কম্পিউটারের কাজে কোন ব্যাঘাত করতে না পারে, সেই জন্য হার্ডওয়্যার মূলত দুই মোডে চলেঃ
১. কার্নেল মোড ও
২. ব্যবহারকারী মোড।
I/O নির্দেশ ও হল্টিং নির্দেশগুলো সহ অন্যান্য প্রিভিলেজ প্রাপ্ত নির্দেশগুলো শুধু কার্নেল মোডেই চলতে পারে। মেমরির যেখানে অপারেটিং সিস্টেম রাখা থাকে (C: ড্রাইভ / সিস্টেম ড্রাইভ), সেই এলাকাটাকেও (সিস্টেম ড্রাইভ) ব্যবহারকারীর হাত থেকে সুরক্ষিত রাখতে হয়, যাতে ব্যবহারকারী এর কোন পরিবর্তন করতে না পারে। কোন লুপ যাতে সৃষ্টি না হয়, সেজন্য সেখানে টাইমার ব্যবহার করা হয়। এই ব্যবস্থাগুলিই (দ্বৈত মোড, প্রিভিলেজপ্রাপ্ত নির্দেশ, মেমরি সুরক্ষা, টাইমার দিয়ে ইন্টেরাপ্ট ইত্যাদি) অপারেটিং সিস্টেমের সঠিকভাবে চলার ভিত্তি হিসেবেই কাজ করে।

প্রসেসঃ
প্রসেস বা জব হচ্ছে অপারেটিং সিস্টেমের কাজের একটি মৌলিক একক। প্রসেস ব্যবস্থাপনা বলতে বুঝায় প্রসেস সৃষ্টি করা, প্রসেস মুছে দেয়া, প্রসেসগুলো কীভাবে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে / সময় মিলিয়ে চলতে পারে, তার মেকানিজম প্রদান করা ইত্যাদি ইত্যাদিকেই বোঝায়। মেমরি ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে অপারেটিং সিস্টেম মেমরির কোন কোন অংশ কে ব্যবহার করছে, তার হিসাব রেখে থাকে। অপারেটিং সিস্টেম ডাইনামিকভাবেই মেমরি এলাকা খালি করতে পারে ও বণ্টন করতে পারে এবং অপারেটিং সিস্টেম স্টোরেজ ব্যবস্থাগুলোরও দেখাশোনা করে থাকে। এই সংক্রান্ত কাজের মধ্যে আছে ফাইল ও ডিরেক্টরি উপস্থাপনের জন্য ফাইল সিস্টেম প্রদান করে, গণ স্টোরেজ ব্যবস্থাগুলোর জায়গা ব্যবস্থাপনা করে।

সুরক্ষা ও নিরাপত্তাঃ
অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারকারী ও নিজেকে রক্ষার জন্যও ওএস কাজ করে। দুইটি ধারণা এখানে উল্লেখ্যঃ
১. সুরক্ষা বা প্রোটেকশন ও
২. নিরাপত্তা বা সিকিউরিটি।
কম্পিউটার কীভাবে বিভিন্ন প্রসেস বা ব্যবহারকারী অ্যাক্সেস করবে, অপারেটিং সিস্টেমের প্রোটেকশন মেকানিজমগুলো তা নিয়ন্ত্রণ করে। আর সিকিউরিটিগুলো কম্পিউটারের বাইরে ও ভেতরের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে থাকে।

বিতরণকৃত ব্যবস্থাঃ
বিতরণকৃত ব্যবস্থাগুলিতে ব্যবহারকারীরা ভৌগলিকভাবে ছড়ানো থাকে কিন্তু কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যুক্ত একাধিক হোস্টের নিয়ন্ত্রণ শেয়ার করতে পারে। এই সেবা ক্লায়েন্ট /সার্ভার কিংবা পিয়ার টু পিয়ার যেকোনভাবেই হতে পারে। গুচ্ছ / ক্লাস্টার ব্যবস্থায় একাধিক যন্ত্র শেয়ারকৃত স্টোরেজে রাখা উপাত্তের উপর গণনামূলক কাজ করতে পারে। এবং ক্লাস্টারের এক বা একাধিক যন্ত্র ফেল করলেও গণনা অব্যাহত বন্ধ হয় না। তার কাজ সে থিকই করতে পারে।

বিশেষ অপারেটিং সিস্টেমঃ
কয়েক ধরনের কম্পিউটার ব্যবস্থা আছে যেগুলো বিশেষ ধরনের কাজের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এমবেডেড, যেমন ক্রেতাদের ব্যবহৃত যন্ত্রসমূহ, যানবাহন, রোবট ইত্যাদিতে রিয়েল-টাইম অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়ে থাকে। রিয়েল-টাইম অপারেটিং সিস্টেমের একটি সুসংজ্ঞায়িত ও নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকে। ঐ সময়সীমার ভেতরে প্রসেসিংগুলোর সমাপ্ত করতে হয়, নয়তো সিস্টেম অকার্যকর হয়ে যায়। কীভাবে অডিও, ভিডিও সিংক্রোনাইজড অডিও-ভিডিও ধারা চালানো হবে, তার জন্য ব্যবহৃত অপারেটিং সিস্টেমে কিছু বিশেষ চাহিদা পূর্ণ করা হয়। বর্তমানে ইন্টারনেট বা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের প্রভাবে আধুনিক অপারেটিং সিস্টেমগুলোতে তাদের নিজেদের ওয়েব ব্রাউজার, নেটওয়ার্কিং ও যোগাযোগ করার সফটওয়্যার ডিফল্ট হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়ে থাকে।

লেখক পরিচিতিঃ

- বিজ্ঞাপন -
পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
সম্পর্কিত পোস্টগুলো
- বিজ্ঞাপন -

জনপ্রিয় পোস্টগুলো

- বিজ্ঞাপন -